বন্ধ্যাত্ব

অনেক সময় দেখা যায়, বিয়ের পর অনেকের বাচ্চা হয় না। অথচ তারা কোনো পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করছে না এবং বাচ্চা নিতে চাইছে। কোনো সমস্যা না থাকলেও কখনো কখনো বাচ্চা হতে দেরি হতে পারে। স্বামী বা স্ত্রী দুজনের কারও কোনো শারীরিক সমস্যার কারণে যদি বাচ্চা না হয়, তবে তাকে বন্ধ্যাত্ব বলে। বন্ধ্যাত্বের সম্ভাব্য কারণ  স্বামী বা স্ত্রীর যেকোনো একজনের প্রজননতন্ত্রের কোনো সমস্যা  যৌনরোগ সময়মতো এবং সঠিক নিয়মে চিকিৎসা না করা  এ ছাড়া মদ, গাঁজা খেলে বা মাদকাসক্ত হলেও যৌনক্ষমতা কমে যায়। এই কারণগুলোর মধ্যে অনেকগুলো প্রতিরোধ করা যায় ও চিকিৎসা করে সন্তান লাভ করা যায়। তবে চিকিৎসার জন্য স্বামী স্ত্রী দুজনকেই এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে। আমাদের দেশে বাচ্চা না হওয়া সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা আছে। যেমন- অভিশাপের কারণে, জাদুটোনার কারণে বা বাতাস লাগলে বাচ্চা হয় না। তবে কারো বাচ্চা না হলে এ ধরনের মনোভাব পোষণ করা ঠিক নয়।
আমাদের দেশে বাচ্চা না হলে সাধারণত মেয়েদের দায়ী করা হয় এবং বাঁজা বলে বিভিন্নভাবে অপমান ও অত্যাচার করা হয় যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। স্বামী বা স্ত্রী যেকোনো একজনের যদি এমন কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে যা বাচ্চা হওয়ার জন্য বাধার সৃষ্টি করে তাহলে বাচ্চা না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি বাচ্চা না হয় তাহলে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়কেই চিকিৎসা করাতে হবে। বাংলাদেশেও উন্নত বিশ্বের মতো অনেক নতুন নতুন চিকিৎসা রয়েছে যা নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তান লাভে সাহায্য করতে পারে। এমনকি ‘টেস্টটিউব বেবির’ মতো উন্নত চিকিৎসাও বাংলাদেশেই সম্ভব। তাই স্বামী বা স্ত্রীর যারই সমস্যা থাকুক না কেন নিরাশ না হয়ে অভিজ্ঞ কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
আমাদের দেশে বাচ্চা না হলে সাধারণত মেয়েদের দায়ী করা হয় এবং বাঁজা বলে বিভিন্নভাবে অপমান ও অত্যাচার করা হয়। দেখা যায়, স্ত্রী একাই পীর-ফকির, ডাক্তার বা কবিরাজের কাছে যায়। কিন্তু স্বামী কোনো পরীক্ষা বা চিকিৎসা করায় না। কারণ মনে করা হয় বাচ্চা হওয়া না হওয়া সব কিছু মেয়েদের ওপর নির্ভর করে। কখনো কখনো বাচ্চা পাবার আশায় স্বামী আবার বিয়ে করে। কিন্তু স্বামীর সমস্যা থাকলে স্ত্রী একা ডাক্তারের কাছে গিয়ে কোনো লাভ হয় না। বরং স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে চিকিৎসা নিলে পরবর্তীতে বাচ্চা পাওয়া সম্ভব।
বাচ্চা না হওয়ার জন্য ছেলে বা মেয়ের কেউ দায়ী নয়। আমাদের সমাজে বাচ্চা না হওয়ার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্ত্রীকে অপবাদ দেয়া হয় যা কখনই ঠিক নয়। কোনো দম্পত্তির বাচ্চা না হলে তাদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শমতো চিকিৎসা নেয়া। বর্তমানে চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নয়নের ফলে সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য অনেক উন্নত ও সফল চিকিৎসা রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক আলোচনা ও সমোঝোতার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাই শুধু বাচ্চা না হওয়া তালাকের জন্য কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ হতে পারে না।