ডায়রিয়া কি?
সাধারণভাবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তিন বা তারও বেশিবার (ঘনঘন) পাতলা পায়খানা হওয়াকে ডায়রিয়া বলে। অন্য কথায় পাতলা পায়খানা হওয়াকে ডায়রিয়া বলা যেতে পারে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার:
ডায়রিয়ার ফলে শরীর থেকে যতটুকু পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় ঠিক ততটুকু পানি ও লবণ যদি সময়মত পূরণ করা হয় তাহলে ডায়রিয়াজনিত পানিস্বল্পতার কারণে অসুস্থতা ও মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা কমে যায় । ডায়রিয়া জনিত পানি ও লবণের স্বল্পতা দুই ভাবে পূরণ করা যায়।
• শিরায় স্যালাইন দিয়ে এবং
• মুখে খাওয়ার স্যালাইন খাইয়ে। [খাওয়ার স্যালাইনকে ওরালস্যালাইন (Oral Saline) বলা হয়)
ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং ডায়রিয়া জনিত মৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে ওরাল স্যালাইন অত্যন্ত কার্যকরী। এ সময় শরীর থেকে যেসব অপরিহার্য উপাদান (লবণ, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ও গ্লুকোজ ) বেরিয়ে যায় তার সবকটিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফরমুলায় তৈরি ওরাল স্যালাইন এ আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (WHO) কর্তৃক অনুমোদিত ওরালস্যালাইনের (যেমন এসএমসি'র ওরস্যালাইন-এন) ফর্মূলা:
উপাদান | পরিমাণ | কি কাজ করে |
সোডিয়াম ক্লোরাইড | ১.৩০ গ্রাম | শরীরে লবণের ঘাটতি পূরণ করে। |
পটাশিয়াম ক্লোরাইড | ০.৭৫ গ্রাম | শরীরে শক্তি যোগায় |
ট্রাইসোডিয়াম সাইট্রেট ডাই হাইড্রেট | ১.৪৫ গ্রাম | বমি বমি ভাব দুর করে |
গ্লুকোজ এনহাইড্রাস | ৬.৭৫ গ্রাম | ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে লবণ ও পানি শোষণে সহায়তা করে |
ওরস্যালাইন-এন এর বিশেষত্ব হলো,
• পূর্বের তুলনায় ডায়রিয়ার মেয়াদ কমায় প্রায় ২২ ভাগ
• পূর্বের তুলনায় বমি কমায় প্রায় ৩০ ভাগ
• পূর্বের তুলনায় শিরায় স্যালাইনের প্রয়োজনীয়তা কমায় প্রায় ৩৩ ভাগ।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে ও নিরাময়ে জিংক:
ডায়রিয়ার সময় শরীর থেকে পানি ও লবণের সাথে প্রচুর পরিমাণে জিংক বের হয়ে যায়। জিংক এক ধরনের মিনারেল যা আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। এটি শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য সহায়ক। শিশুদের ক্ষেত্রে, ডায়রিয়া শুরুর প্রথম দিন থেকে খাওয়ার স্যালাইনের পাশাপাশি জিংক (ট্যাবলেট/ সিরাপ) খাওয়াতে হবে।
ডায়রিয়ার চিকিৎসায় খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি জিংক ব্যবহারের উপকারিতা:
• ডায়রিয়ার স্থায়িত্ব ও তীব্রতা কমে যায়
• ভবিষ্যতে বার বার ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়
• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
• অল্পদিনেই শিশু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে
বিঃ দ্রঃ খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর ১ ঘন্টা পর জিংক খেতে দিন। নিয়ম মেনে ১০ দিনে ১০টি জিংক ট্যাবলেট খাওয়ালে শিশুর ভবিষ্যতে ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। তাই ১০ দিনের আগে ডায়রিয়া সেরে গেলেও জিংক-এর ১০টি ট্যাবলেটের ডোজ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে।