বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন

সাধারণত শৈশব ও যৌবোনের মাঝামাঝি ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত সময়টিকে কৈশোর বা বয়:সন্ধিকাল বলে। এই বয়সে ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয় যা তাদের মনে সংকোচ ও দুশ্চিন্তার জন্ম দেয়। 

মানসিক পরিবর্তন সমূহ

এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

• বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে ছেলেমেয়েদের নিজেদের শরীর সম্পর্কে কৌতূহল হয়, শরীরের পরিবর্তন বিষয়ে জানতে চায়।
• নারী-পুরুষের সম্পর্ক বিষয়ে জানতে চায় ।
• নিজেদের বড় ভাবতে শুরু করে।
• ছেলেমেয়ের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণবোধ করে।
• অজানা জিনিস জানার বিষয়ে কৌতূহলী হয়।
• চেহারা, সৌন্দর্য ও পোশাক সম্পর্কে সচেতন হয় এবং অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করে ।
• কেউ আবার একা থাকতে পছন্দ করে, কারো সামনে যেতে চায় না। একটা সঙ্কোচ কাজ করে তাদের মধ্যে ।
• এ বয়সে মন চঞ্চল হয়ে ওঠে । দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, আবেগ আর অস্থিরতা কাজ করে । কখনো মন বিষন্ন হয়ে ওঠে, আবার কখনো মন খুশিতে ভরে যায় । কেউ হয়ে ওঠে অভিমানী, কেউবা কৌতূহলী। তবে এই পরিবর্তনগুলো সাময়িক । বড় হওয়ার সাথে সাথে সব স্বাভাবিক হয়ে যায় ।

 

শারীরিক পরিবর্তন সমূহ

দশ বছর বয়স থেকে বড় হওয়া শুরু হলেও সবার বেড়ে ওঠা একই রকম নয়। কেউ তাড়াতাড়ি বড় হয়ে ওঠে, কেউবা কিছুটা দেরিতে । এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই । কারণ, একেক জন মানুষের শরীরের গঠন একেক রকম । একজন মানুষের শরীরের বৃদ্ধি নির্ভর করে তার শরীরের গঠন আর পুষ্টির উপর। তবে পরিবর্তনগুলো খুব স্বাভাবিক।

কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকাল কৌতূহলের বয়স । নিজের শরীর সম্পর্কে জানতে চাওয়া ভালো এবং এতে লজ্জা পাবার কিছু নেই । কিছু জানতে ইচ্ছা করলে বা কিশোর-কিশোরীরা কোনো সমস্যায় পড়লে বাবা-মা বা বড়দের সাথে এ ব্যাপারগুলো আলাপ করতে অস্বস্তি বোধ করে এবং সমবয়সি বা বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে । এ বয়সে ছেলেমেয়েরা বন্ধুদের প্রতি বেশি নির্ভরশীল হয়, বন্ধুদেরকে বেশি গুরত্ত্ব দেয়, বন্ধুদের দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়। বন্ধু তাদের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে । তাই ভাল বন্ধু নির্বাচন করা খুব দরকার।

 

বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন কেন হয়

বয়ঃসন্ধিকালের সময়ে শরীরে ও মনে স্বাভাবিকভাবেই অনেক পরিবর্তন আসে । কারো এ পরিবর্তন আগে শুরু হয় আবার কারোও বা পরে । বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের শরীরের এসব পরিবর্তন হরমোন নিঃসরণের কারণে হয়ে থাকে । হরমোন হচ্ছে শরীরের ভেতরে তৈরি এক ধরনের গ্রন্থিরস যা দেহকে সক্রিয় রাখে এবং দেহের বৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করে । শরীর বেড়ে ওঠার এ ব্যাপারটা অনেকটাই নির্ভর করে শরীরের গঠনের উপর। তবে এখানে সঠিক পুষ্টিরও বেশ প্রভাব রয়েছে ।