পরিবার পরিকল্পনা

একটি মেয়ের ২০ বছর বয়সের পর বাচ্চা নেয়া মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। যদি এ বয়সের আগে কোনো মেয়ে গর্ভবতী হয়, তবে তার নানান ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। কারণ এ সময়ে মেয়েদের কোমরের হাড় পুরোপুরি বাড়ে না, তাই গর্ভবতী হলে পেটের বাচ্চা বেড়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট জায়গা পায় না। ফলে কম ওজনের শিশু জন্ম নেয়, আর এসব শিশুর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম থাকে। অল্প বয়সে প্রসব বা ডেলিভারির রাস্তাটি ছোট থাকে তাই বাচ্চা হওয়ার সময় অতিরিক্ত চাপের ফলে এ রাস্তা ছিঁড়ে যায়, অনেক সময় বাচ্চা বের হতেও অনেক কষ্ট হয়। এ বয়সে মা হলে মা ও সন্তানের মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। এ ছাড়া অল্প বয়সে ছেলেরা ও মেয়েরা মানসিকভাবে পুরোপুরি বড় হয় না। বাচ্চা যত্ন ও লালন-পালন করতে হয়, কীভাবে বাচ্চা বড় করে তুলতে হয় তা অল্পবয়সি মেয়েরা তেমন বুঝতে পারে না। আর অল্পবয়সি ছেলেদের বাবা হবার মতো দায়িত্ববোধ ও সামর্থ্য তৈরি হয় না। এখানে একটা বিষয় জেনে রাখা ভালো যে, প্রথম যৌনমিলনেও পেটে বাচ্চা আসতে পারে। বেশির ভাগ স্বামী-স্ত্রী বিয়ের শুরুতেই বাচ্চা নেয়ার কথা ভাবে না। প্রথমে তারা পরস্পরকে জানতে চায়, বুঝতে চায়, কিছুটা প্রস্তুতি নিতে চায়। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে না জানার কারণে এবং কোনো পদ্ধতি ব্যবহার না করার কারণে অনেক দম্পতির ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও বিয়ের পরপরই গর্ভধারণ করে। তাই, শুরুতেই বাচ্চা নিতে না চাইলে প্রথম রাত থেকে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে, প্রথম রাত থেকেই কনডম ব্যবহার করতে হবে এবং পরবর্তীতে স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে পরামর্শ করে যেকোনো পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করা প্রযোজন। কনডম নবদম্পতিদের জন্য একটি উপযুক্ত পদ্ধতি।
প্রত্যেক ছেলে-মেয়েরই বিয়ের আগে পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানা উচিত। পরিকল্পিত পরিবার গঠন সুখী জীবনের চাবিকাঠি। এতে লজ্জার কিছু নেই। কারণ এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকলে কখন বাচ্চা নেয়া উচিত, সে ব্যাপারে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। জীবনকে সুখী ও সুন্দর করার লক্ষ্যে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে চিন্তাভাবনা করে পরিকল্পিতভাবে পরিবার গঠন করাই হচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা। সন্তান নেবার আগে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে চিন্তা করবে তারা কখন সন্তান নিতে চায় এবং সন্তান নেবার জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতি তাদের আছে কিনা। উল্লেখ্য, ২০ বছর বয়সের আগে মেয়েদের শরীরে মা হওয়ার মতো পূর্ণতা আসে না। এ ছাড়া বিয়ের পর পরস্পরকে বোঝার ও জানার জন্য কিছু সময় প্রয়োজন। সন্তান হওয়ার পর তাকে আদর-যত্ন দিয়ে বড় করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং সন্তান লালনপালন করার মতো যথেষ্ট আয় রোজগার আছে কিনা তা ভেবে-চিন্তে সন্তান নেয়া উচিত।
দেরিতে সন্তান চাইলে বা আর কোনো সন্তান না চাইলে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এ পদ্ধতিগুলোকে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি বলে। প্রচলিত পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিগুলো হলো- খাবার বড়ি, কনডম, আইইউডি (কপার-টি), ইনজেকশন, নরপ্ল্যান্ট, মহিলা বন্ধ্যাকরণ (টিউবেকটমি/লাইগেশন) এবং পুরুষ বন্ধ্যাকরণ (এনএসভি/ ভ্যাসেকটমি)। তবে মহিলা বন্ধ্যাকরণ (লাইগেশন) ও পুরুষ বন্ধ্যাকরণ (এনএসভি) যেগুলো স্থায়ী পদ্ধতি হিসেবে চিহ্নিত সেগুলো পরিপূর্ণ পরিবার (দুই সন্তান)-এর জন্য।
যৌনমিলনের সময় ছেলেদের শুক্রাণু মেয়েদের ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়ে মেয়েদের গর্ভধারণ হয় এবং পেটে বাচ্চা আসে। পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করলে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে গর্ভধারণ হয় না।
পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি দু’রকম, অস্থায়ী এবং স্থায়ী পদ্ধতি। যতদিন অস্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় ততদিন পেটে বাচ্চা আসে না, ব্যবহার বন্ধ করার পর বাচ্চা চাইলে আবার বাচ্চা হয়। খাবার বড়ি, কনডম, আইইউডি (কপার-টি), ইনজেকশন ও ইমপ্ল্যান্ট অস্থায়ী পদ্ধতি। কাজেই যারা মনে করে এসব পদ্ধতি ব্যবহার করলে বাচ্চা হওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে যায়, তাদের ধারণা ভুল। তবে স্থায়ী পদ্ধতি (যেমন: লাইগেশন ও এনএসভি) গ্রহণ করলে বাচ্চা একেবারেই হয় না। তাই কোনো স্বামী-স্ত্রী যদি স্থায়ী পদ্ধতি (যেমন: মহিলা বা পুরুষ বন্ধ্যাকরণ) গ্রহণ করেন, তাহলে বাচ্চা হওয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
বিয়ের আগে যৌনমিলন আমাদের ধর্ম ও সমাজ অনুমোদন করে না। কাজেই বিয়ের আগে খাবার বড়ি ব্যবহারের প্রয়োজন আসে না।
বিয়ের সাথে সাথেই পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। বিয়ের সাথে সাথে কেউ বাচ্চা নিতে না চাইলে অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি, যেমন- খাবার বড়ি, কনডম ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। মাঠকর্মী বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এর মধ্যে যেকোনো একটি পদ্ধতি বেছে নেয়া যায়।
যারা নতুন বিয়ে করেছেন এবং দেরিতে বাচ্চা চান তাদের জন্য কনডম অথবা খাবার বড়ি কিংবা ইমপ্ল্যান্ট উপযুক্ত পদ্ধতি। যেকোনো সরকারি ও এনজিও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক থেকে এ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে এ সেবা নিতে হবে।
আমাদের সমাজে অনেক গুরুজন বিয়ের পরপরই নতুন বাচ্চার মুখ দেখতে চান। তাই নতুন বউকে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেন না। অনেকে মনে করেন অন্তত একটা বাচ্চা হওয়ার আগে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করা ঠিক নয়। কিন্তু এ ধারণা ভুল। নববিবাহিত দম্পতি বাচ্চা নিতে না চাইলে কনডম অথবা খাবার বড়ি কিংবা ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার করতে পারেন। কনডম বা খাবার বড়ি যেকোনো ওষুধের দোকান ও অন্যান্য অনেক দোকানে পাওয়া যায়। ইমপ্ল্যান্ট সরকারি ও এনজিও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে পাওয়া যায়।
কনডম পুরুষদের ব্যবহারের জন্য একটি অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি। এটি পাতলা, নরম রাবারের খাপ যা যৌনমিলনের সময় পুরুষাঙ্গে পরে নিতে হয়। এতে যৌনমিলনের সময় বীর্য কনডমের মধ্যেই থেকে যায় এবং যোনিপথে ঢুকতে পারে না বলে বাচ্চা হয় না। একটি কনডম একবারই ব্যবহার করা যায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ ছাড়াও কনডমের সবচেয়ে বড় সুবিধা যে এটি যৌনরোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
বিয়ের আগে দৈহিক মিলন আমাদের সমাজে ও ধর্মে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই, বিয়ের আগে যৌনমিলন করা ঠিক নয়। যদি কোনো পুরুষ বিয়ের আগে কোনো মেয়ের সাথে দৈহিক মিলনে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে যৌনরোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তাকে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করতে হবে। অপরদিকে, অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ থেকে রক্ষার জন্য দৈহিক মিলনের সময় নিয়ম অনুযায়ী কনডম বা খাবার বড়ি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
কনডম পুরুষদের একটি নিরাপদ, সহজ, অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি। এ পদ্ধতির কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। কনডম ব্যবহারে যৌন শক্তি কমে না বা স্বামীর আয়ুও কমে যায় না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কনডম ব্যবহার করলে স্বামী বা স্ত্রী কারোরই কোনো অসুখ বা অসুবিধা হয় না বরং বিভিন্ন যৌনরোগ যেমন সিফিলিস, গনোরিয়া, হেপাটাইটিস-বি এবং এইডস-এর মতো ভয়ংকর রোগ থেকে বাঁচা যায়।
একমাত্র কনডমই যৌনরোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কিন্তু খাবার বড়ি যৌনরোগ থেকে পুরুষ বা নারী কাউকেই রক্ষা করতে পারে না।
বিয়ের আগে দৈহিক মিলন আমাদের সমাজে ও ধর্মে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই বিয়ের আগে যৌনমিলন করা ঠিক নয়। যদি কোনো পুরুষ বিয়ের আগে কোনো মেয়ের সাথে দৈহিক মিলনে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে যৌনরোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য অবশ্যই কনডম ব্যবহার করতে হবে। অপরদিকে অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ থেকে রক্ষার জন্য দৈহিক মিলনের সময় নিয়ম অনুযায়ী কনডম বা খাবার বড়ি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
কারো কারো কনডম ব্যবহারে অতৃপ্তি লাগতে পারে। প্রথম প্রথম অনভ্যাসের কারণে অতৃপ্তি মনে হলেও ধৈর্য ধরে ব্যবহার করলে দেখা যায় কনডম ব্যবহারে আর অতৃপ্তি লাগে না। খাবার বড়ি ব্যবহারের প্রথম দিকে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (অসুবিধা) হতে পারে। তবে আস্তে আস্তে এগুলো কমে যায়। কোনো পদ্ধতি ব্যবহারে অসুবিধা হলে মাঠকর্মীর সাথে পরামর্শ করে অন্য যেকোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।
খাবার বড়ি ও কনডম দুটোই অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি। খাবার বড়ি মহিলাদের জন্য আর কনডম পুরুষদের জন্য। দুটো পদ্ধতিই সঠিকভাবে ব্যবহার করে অস্থায়ীভাবে পরিবার পরিকল্পনা করা যায়। খাবার বড়ি খেলে অনেক সময় প্রথম কিছুদিন মাথা ঘোরা বা বমি বমি লাগতে পারে। আবার কনডমের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি হিসেবে বড়ি বা কনডম দুটোই ভালো। তবে একেক পদ্ধতি একেকজনের শরীরের সাথে মানিয়ে যায়।
খাবার বড়ি খেলে ভবিষ্যতে গর্ভধারণে কোনো সমস্যা হয় না। বড়ি খাওয়া বন্ধ করলেই একজন মহিলা আবার গর্ভধারণ করতে পারেন।
খাবার বড়ি সম্বন্ধে অনেকেরই অনেক ধরনের ভুল ধারণা আছে, যেমন- খাবার বড়ি খেলে গলা জ্বলে, ঘুম ঘুম লাগে, জরায়ুতে অসুখ হয়, বাচ্চা হয় না ইত্যাদি। কিন্তু এসব ধারণা ঠিক নয়। এ ধরনের সমস্যা অন্য কারণেও হতে পারে। এ রকম হলে মাঠকর্মীর সাথে কিংবা নিকটস্থ সরকারি/এনজিও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে যোগাযোগ করতে হবে।
কোনো অবস্থাতেই মোটা হওয়ার জন্য খাবার বড়ি খাওয়া উচিত নয়। এটা জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি। এ ছাড়া মোটা হওয়া মানেই ভালো স্বাস্থ্য নয় বরং সুস্থ থাকাটা জরুরি। এজন্য নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া, ব্যায়াম ও বিশ্রাম করে স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়।
খাবার বড়ি ব্যবহার করলে প্রথম দিকে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন: ফোঁটা ফোঁটা রক্তস্রাব, বমি বমি ভাব, স্তন ভারি হওয়া, মাথা ব্যথা এবং ওজন বেড়ে যাওয়া। তবে আস্তে আস্তে এ সমস্যাগুলো কমে যায়। এ ব্যাপারে ভয় পাবার কিছু নেই।
যেকোনো পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করার পর কিছু দিন ধৈর্য ধরতে হয়। যদি কোনোভাবেই সমস্যাগুলো না কমে বা তীব্র আকার ধারণ করে, তাহলে শীঘ্রই মাঠকর্মীর সাথে পরামর্শ করে অন্য কোনো পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে।
খাবার বড়ি এবং ইনজেকশন (সুঁই) দুটোই অস্থায়ী পদ্ধতি এবং দুটো পদ্ধতিই ভালো। যার যে পদ্ধতি শরীরের সাথে মানিয়ে যায় তার সে পদ্ধতি নেয়াই ভালো। ইনজেকশনের একটা সুবিধাজনক দিক হচ্ছে এটা প্রতিদিন নিতে হয় না, তবে প্রতি তিনমাসে একবার নিতে হয়। এখানে নববিবাহিত দম্পতিরা ইচ্ছা করলে ইমপ্ল্যান্ট নিতে পারেন।
ইনজেকশন বা সুঁই নেবার পর প্রথম প্রথম মাসিকের কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন- মাসিক কমে যাওয়া বা একেবারে না হওয়া। এতে ভয় পাবার কিছু নেই, ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। তবে কারো যদি মনে হয় যে, তার পেটে বাচ্চা এসেছে তাহলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে প্রকৃতপক্ষেই বাচ্চা এসেছে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। ইনজেকশনের ডোজ শুরু করার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মী দ্বারা পরীক্ষা করানো ভালো।
বেশির ভাগ মেয়েদের ২৮ দিন পর পর মাসিক হয়। তবে, কম বেশিও হতে পারে। মাসিকের পুরো সময়টিকে ৩ ভাগে ভাগ করে নেয়া যায়। ২৮ দিনের ভেতরে মাঝের ১০ দিন যদি যৌনমিলন করা হয় তাহলে পেটে বাচ্চা আসার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এর আগের এবং পরের দিনগুলো হচ্ছে নিরাপদকাল। এটি কোনো নিশ্চিত পদ্ধতি নয়। এই পদ্ধতি মেনে চললেও যেকোনো সময় পেটে বাচ্চা আসতে পারে।
মাসিকের সময় যৌনমিলন করা উচিৎ নয়। এতে শরীরে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। মেয়েদের মাসিকের সময় যোনিপথ অস্বাস্থ্যকর থাকে। মাসিকের সময় যৌনমিলন করলে সঙ্গীর অস্বস্তি লাগতে পারে এবং নারীদের বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ হতে পারে।
স্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা ব্যবস্থা যেমন- মহিলা বন্ধ্যাকরণ (লাইগেশন) অথবা পুরুষ বন্ধ্যাকরণ (এনএসভি) করালে আর বাচ্চা হয় না। এটা একটি ছোট্ট অপারেশন। যারা ভবিষ্যতে আর কোনো দিন বাচ্চা চায় না তাদের জন্য এই স্থায়ী পদ্ধতি। স্থায়ী পদ্ধতি নিরাপদ ও সহজ। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নির্বাচিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং কিছু কিছু এনজিও ক্লিনিকে এ অপারেশনের ব্যবস্থা আছে।
মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সকল পরিবার কল্যাণ সহকারী, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, জেলা সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহের মডেল ক্লিনিক, বিএসএমএসইউ, আজিমপুর এমসিএইচটিআই, এমএফএসটিসি ও এনজিও ক্লিনিক থেকে এ সম্বন্ধে জানা যাবে। সব বেসরকারি পারিবারিক স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র যেমন- কমিউনিটি ক্লিনিক, স্যাটেলাইট ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সদর হাসপাতাল, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহের মডেল ক্লিনিক থেকে এ সম্বন্ধে জানা যাবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সংশ্লিষ্ট মাঠকর্মীর কাছ থেকেও এ সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যাবে।